শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভে উত্তাল রাজধানী, অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের পদত্যাগ দাবি


 **জবি শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভে উত্তাল রাজধানী, অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের পদত্যাগ দাবি**


**ঢাকা, ১১ নভেম্বর, ২০২৪:** 


রাজধানীর শিক্ষা প্রতিষ্ঠান জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) শিক্ষার্থীরা অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ডক্টর মুহাম্মদ ইউনুসের কাছে কিছু বিশেষ দাবি নিয়ে বিক্ষোভে ফেটে পড়েছেন। সম্প্রতি ঘোষিত নতুন উপদেষ্টা কমিটির সদস্য ফারুকীকে কেন্দ্র করে শিক্ষার্থীদের মধ্যে অসন্তোষ দানা বেঁধেছে, যা ক্রমশ তীব্র আন্দোলনের রূপ নিচ্ছে। শিক্ষার্থীরা অভিযোগ করছেন, সরকারের এই অন্তর্বর্তীকালীন কমিটি দেশের উন্নয়ন এবং শিক্ষার্থীদের অধিকার রক্ষা করতে ব্যর্থ হচ্ছে। 


### **দাবিগুলো ও শিক্ষার্থীদের অসন্তোষ**


শিক্ষার্থীরা বিশেষ করে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের দায়িত্বশীলতা এবং প্রশাসনের স্থবিরতা নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন। বিক্ষোভে অংশগ্রহণকারী অনেকেই বলেছেন, সরকার দেশের বর্তমান সংকটগুলো মোকাবেলায় প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে ব্যর্থ হয়েছে এবং এমন অস্থির পরিস্থিতিতে ফারুকীকে উপদেষ্টা হিসেবে নিয়োগ দেওয়া শিক্ষার্থীদের বিশ্বাস এবং প্রত্যাশার সাথে সাংঘর্ষিক। শিক্ষার্থীদের দাবি, ফারুকীর নেতৃত্বে যে দলটি গঠন করা হয়েছে, তা শিক্ষার্থীদের চাহিদা, উন্নয়ন এবং স্বাধীন মতামত বজায় রাখতে যথেষ্ট নয়। 


### **বিক্ষোভের সময়কার ঘটনাপ্রবাহ**


শিক্ষার্থীরা সোমবার সকালে ক্যাম্পাসের সামনে জড়ো হয়ে প্ল্যাকার্ড হাতে নিয়ে বিক্ষোভ শুরু করেন। তাদের প্ল্যাকার্ডগুলোতে দেখা যায়, “যোগ্য সরকার চাই, ব্যর্থ নয়,” এবং “পদত্যাগ করুণ, দেশের ভবিষ্যৎ বাঁচান।” শিক্ষার্থীরা আরও বলেন, “আপনারা যদি দেশ সঠিকভাবে পরিচালনা করতে না পারেন, তাহলে দায়িত্ব ছেড়ে দিন।”


বিক্ষোভে অংশগ্রহণকারী শিক্ষার্থীরা দাবি করেন, বর্তমানে দেশের বিভিন্ন খাতে সংকটের সৃষ্টি হয়েছে এবং সরকারের উচিত ছিল সেগুলোর প্রতিকার করা। এদিকে, সরকারের প্রতিনিধি হিসেবে কেউ উপস্থিত না থাকায় শিক্ষার্থীরা অসন্তোষ প্রকাশ করেন। 


### **প্রধান উপদেষ্টা ও উপদেষ্টা কমিটির প্রতিক্রিয়া**


অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনুস শিক্ষার্থীদের দাবি শুনতে এবং তাদের সন্তুষ্ট করতে যথাসাধ্য চেষ্টা করবেন বলে জানান। তবে, আন্দোলনের ব্যাপারে তিনি এখনো কোনো আনুষ্ঠানিক মন্তব্য করেননি। অন্যদিকে, ফারুকীসহ উপদেষ্টা কমিটির সদস্যরা শিক্ষার্থীদের আহ্বান জানান শান্তিপূর্ণ অবস্থান বজায় রাখতে এবং আলোচনার মাধ্যমে সমস্যার সমাধান করতে।


### **বিশ্লেষকদের মতামত**


রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, শিক্ষার্থীদের এই আন্দোলন দেশের বর্তমান রাজনৈতিক স্থিতিশীলতার জন্য একটি নতুন চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে। এক বিশ্লেষক জানান, “যদি সরকারের পক্ষ থেকে দ্রুত কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করা না হয়, তাহলে এই বিক্ষোভ আরও বড় আন্দোলনের দিকে মোড় নিতে পারে।” 


### **সংকট সমাধানে করণীয়**


বিক্ষোভকারীদের শান্ত করতে সরকার কি ব্যবস্থা নেবে, সেটাই এখন দেখার বিষয়। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বর্তমান সরকারকে এই সংকট মোকাবেলায় দ্রুত কার্যকরী পদক্ষেপ নিতে হবে, যাতে শিক্ষার্থীদের আস্থা পুনরুদ্ধার করা যায়। আলোচনার মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের সাথে একটি সমঝোতায় পৌঁছানোই সরকারের জন্য সঠিক পদক্ষেপ হতে পারে। 


দেশের শিক্ষার্থীরা একটি সুস্থ ও সুন্দর সমাজ গঠনের আশা নিয়ে সরকারের প্রতি আস্থা রেখেছিলেন। সরকারের উচিত এখন তাদের সাথে আলোচনা করে দ্রুত কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করা, যাতে দেশের শিক্ষাব্যবস্থা এবং সামাজিক স্থিতিশীলতা বজায় থাকে।

Post a Comment

Previous Post Next Post