গল্পঃ_ভিলেন পর্বঃ ০৫+৬+৭

 


গল্পঃ_ভিলেন


লেখিকাঃ আদিবা ইসলাম আঁখি


পর্বঃ ০৫


---------------------★★-----------------------


   নিচে নামতেই হঠাৎ উপর থেকে গোলাপের পাপড়ি পড়েতে লাগলো,,,, 


আশা: উয়াও নাইচ কাপাল,,,,,


আম্মু: হুমমম সত্যি দুজনকে অনেক সুন্দর মানিয়েছে


আব্বু: হুমমম


মিঃ মাসুদ: বউমাকে এদিকে এসো 


আমি: হুমম যায় বাবা,,,,,


   মিঃ মাসুদ আমায় নিয়ে সবার সাথে পরিচয় করি দিলো,,, তখনি আম্মু এসে হাতটা ধরে ফাঁকে নিয়ে আসলো,,,,,


আমি: কি হলো আম্মু


আম্মু: সোনা তুই হ্যাপি তো


আমি: হ্যাঁ আম্মু


আম্মু: সত্যি তো নাকি অভিনয় করছিস


আমি: আম্মু কি যে বলো না তুমিই তো বলেছো বিয়ের পর সব মেয়েদের বানিয়ে নিতে হয়,,,,


আম্মু: হুম আমার মেয়েটা কত বড় হয়ে গেছে এই একদিনে,,,,,,,


আমি: হুমম ( জোরিয়ে ধরে)  


মা: কি আম্মু কে পেয়ে মা রে ভুলে গেছো


আমি: মা আপনি!! কি যে বলেন আমার তো দুটো মা,,,,


মা: পাগলি টা ( মাথায় হাত বুলিয়ে দিলো,,,) 


         আমি লোকটার পাশে দাড়িয়ে আছি হঠাৎ একজন এসে লোকটা কে জোরিয়ে ধরে বলে উঠলো,,,,


 Someone: কংগ্রেস মিঃ শুভ আহম্মেদ তাজ


লোকটা: থ্যাংক ব্রো


Someone: ভাবতে পারি নি এতো তাড়াতাড়ি বিয়ে করে ফেললে


লোকটা: আরে ব্রো হঠাৎ ই হয়ে গেলো,,,,


Someone: হঠাৎ করে প্রেম হাউ সুইট


লোকটা: আরে ব্রো তেমন নয় আসুন বলি,,,,


        দুজনই হাসতে হাসতে চলে গেলো আমি বোকার মতো দাড়িয়ে রয়লাম,,,,,


আমি: শুভ!! নাম টা কিন্তুু ভারি সুন্দর,,,,,( মুচকি হেসে) 


     হঠাৎ পিছনে একজন এসে হাতটা ধরে নিয়ে আসলো শুভর কাছে

   এদিকে শুভর বন্ধু গুলো আমার দিকে আবাক দৃষ্টিতে তাকালো,,,,,,


শুভ: এই হচ্ছে তোদের ভাবি ,,,,


          আমি শক্ট হলাম ওনাদের দেখে সবাই ভুত দেখার মতো আমার দিকে তাকিয়ে রয়লো,,,,,


আশা: হেই গাইচ ভাইয়া আর ভাবিরর সাথে পড়ে আড্ডা দিও এখন নিয়ে যায় ঠিক আছে,,,,


শুভ: কোথায় যাবো


আশা: আগে এসো তো,,,,


      আশা দুজনকেই টানতে টানতে নিয়ে আসলো,,,,


শুভ: কি হলো,,,,


আশা: ওয়েট ভাইয়া,,,,,,,, 

       শুভ সন্ধা গেইচ,,,,আজ আমার ভাইয়া আর ভাবির রিসেপ্সন পার্টি সো ভাইয়া আর ভাবির তো একটা কাপাল ডান্স হতেই পারে তাই না,,,,


     আশার কথা শুনে সবাই সম্মতি জানালো!! আমি শুভর দিকে তাকালাম,,,,


শুভ: আমি ডান্স পারি না,,,,,


আমি: আমি ও না


আশা: মিথ্যা বলো না চলো চলো শুরু করো,,,,ভাইয়া যাও প্লিজজ


আমি: আশা আমি বলছি কি থাক না


আশা: নো প্লিজজ ভাবি,,,,,


আমি: হুম! কিন্তুু,,,


       তখনি লোকটা হাত বাড়িয়ে দিলো তার হাতে হাতটা রাখতেই একটানে তার বুকে উপর নিয়ে ফেললো আলতো করে কোমড়ে হাত নিয়ে ডান্স শুরু করলো,,,,,


আমি: একটা কথা জিগাঞ্জা করবো 


শুভ: জ্বি বলেন মহারানী ভিক্টরিয়ার,,,,,,,


আমি: আপনার বন্ধু গুলো ওমন করে তাকিয়ে ছিলো কেনো আমার দিকে,,,,,


      হঠাৎ শুভ আমায় ছিটকে সরিয়ে দিলো,,,,


আমি: কি হলো,,,,,


   শুভ আমার কথার উওর না দিয়ে হন হন করে উপরে উঠে চলে গেলো সবাই আমার দিকে তাকিয়ে রয়লো,,,


আশা: ভাবি কোন সমস্যা,,,,,


আমি: জানি না!!!! হঠাৎ কি হলো ( বিড় বিড় করে) 


আব্বু: আম্মাজান কোন প্রবলেম


আমি: না না আব্বু আসলে উনার একটু মাথা ব্যাথা করছে তাই চলে গেলো ( সরি আব্বু মিথ্যা বলতে হলো) 


মা: সে কি বউমা তুমি যাও দেখো মেডিসিন লাগবে নাকি


আম্মু: হুম সোনা গিয়ে দেখ,,,,,


আমি: ঠিক আছে যাচ্ছি,,,,,,


        তাড়াতাড়ি করে উপরে এসে রুমে ডুকে দেখি লোকটা বেলকুনি দাড়িয়ে সিগারেট টানছে,,,,,


আমি: এমন করে চলে আসলেন কেন,,,,,,ছিঃ কি করছেন এসব,,,,,


    শুভ আমার কথার উওর না দিয়ে জোরে জোরে সিগারোট টানতে লাগলো,,,,,,


আমি: আমি আপনার সাথে কথা বলছি,,,, 


         শুভর কাছে গিয়ে হাতটা ধরে সিগারেট টা হাতে নিয়ে বাইরে ছুড়ে মারলাম,,,,,


শুভ: সমস্যা কিহহহ ( ধমক দিয়ে) 


আমি: আমি আপনাকে কিছু জিগাঞ্জা করছি,,,,,


শুভ: আমি আপনার কোন কথার উওর দিতে বাধ্য নয়,,,,


আমি: আপনি উওর দিতে বাধ্য


শুভ: রিয়েলি,,,,,


আমি: হুমমমম কারন আমি আপনার বউ হয় বিয়ে করেছেন আমায়,,,,,


         শুভ হাসতে হাসতে রুমে গিয়ে বিছানায় বসে পড়লো,,,,


আমি: অদ্ভুত মানুষ তো,,,,,


শুভ: (নিশ্চপ,,,,)


আমি: কি এমন হলো যে এভাবে নিচ থেকে চলে আসলেন নিচে সবাই কি ভাবছে বলুন তো 


শুভ: চুপপপপপপপপ ( জোরে চিৎকার করে) সারাক্ষন বক বক যাস্ট অসয্য,,,,,


আমি: এমন করতেছেন কেনো,,,,,,


শুভ: তো কি করবো!!! দেখুন আমার একা থাক তে দেন প্লিজ চলে যান এখান থেকে


আমি: হঠাৎ মানুষটা কি হলো,,,,কেনো এমন করছে সব তো ঠিক ছিলো,,,,,,


     কথা গুলো ভাবতে ভাবতো রুম থেকে বের হতেই আয়শা সামনে পড়লো,,,,,,


আয়শা: সবে তো শুরু মাই ডেয়ার ভাবি ( গাল টেনে দিয়ে) 


আমি: মানে 


আয়শা: তোমার জন্য অনেক সারপ্রাইজ আছে!!! ওয়েট করো,,,,,জানো ভাবি তোমার জন্য সত্যি মাঝে মাঝে খুব খারাপ লাগে


আমি: তুমি কি বলছো এসব,,,,,


আয়শা: সব বুঝতে পারবে,,,, ওয়েট এন্ড সি ডেয়ার,,,,,,,,


আমি: আয়শা প্লিজ শোন,,,,, দাড়াও বলছি,,,,


          আয়শা চলে গেলো ,,,,


( চলবে)

গল্পঃ_ভিলেন


লেখিকাঃ আদিবা ইসলাম আঁখি


পর্বঃ ০৬


---------------------★★-----------------------


   ____আয়শার কথা গুলো মাথায় বার বার ঘুরপাক খাচ্ছিলো!!!! আয়শা কি বলে গেলো এগুলো

 তখনি নিচ থেকে ডাক আসলো সাত-পাঁচ না ভেবে নিচে আসলাম,,,,,,


মা: শুভ কি এখন ঠিক আছে,,,,


আমি: হ্যাঁ,,,,,


আম্মু: কি থেকে যে কি হয়ে গেলো,,,,


আমি: আম্মু টেনশন করো না সব ঠিক হয়ে যাবে,,,,,,,


 আম্মু: আচ্ছা ঠিক আছে,,,,,


        আশা জোর করে কয়টা সেল্ফি তুললো,,,,সবাই মিলে আড্ডা দিচ্ছি হঠাৎ চোখ পড়লো শুভর ফেন্ড গুলোর উপর ছেলে গুলো এখনো আমার দিকে তাকিয়ে আছে ভিতরে বেশ অস্তি বোধ কাজ করতেছিলো,,,,,, 


      ___রাতে সবাই বাসায় চলে গেলো,,,,,আমিও নিজের রুমে দিকে যাচ্ছি তখনি পিছন থেকে আশা ডাক দিলো,,,,,


আমি: কিছু বলবে,,,,


     আশা একটা গিফট বক্স সামনে ধরলো,,,,,


আমি: কি এটা,,,,


আশা: আমি জানি না তবে এই গিফট বক্স উপর লেখা ছিলো স্প্যাশাল গিফট শুধু তোমার জন্য তাই তোমাকে দিতে আসলাম,,,,,,


আমি: স্প্যাশাল ( বক্সটা হাতে নিয়ে) 


আশা: খুলে দেখো,,,


আমি: রুমে গিয়ে দেখে নিবো নি,,,


আশা: ওকে ফাইন,,,,শুভ রাএী


আমি: হুমম শুভ রাএী,,,,,


      আশা মুচকি হেসে নিজের রুমে চলে গেলো আমিও রুমে ডুকে দেখি শুভ সোফায় বসে ল্যাপটপ ঘাঁটছে,,,,,, 

গিফট বক্সটা টেবিলের উপর রেখে ওয়াসরুমে চলে গেলাম ফ্রেস হয়ে এসে দেখি লোকটা সেই জায়গা বসে আছে আসতে করে গিয়ে পাশে বসতেই আড়চোখে তাকালো,,,,,,,


আমি: এখন রেগে আছেন নাকি,,,,


শুভ: ( নিশ্চপ)  


আমি: এইইইইই


শুভ: সমস্যা কি? এতো জোরে চিল্লানোর কি আছে,,,,,


আমি: কই চিল্লালাম


শুভ: বেশি বক বক না করে বলেন কি বলবেন দেখছেন তো কাজ করছি,,,,,,


আমি: কিহহ আমি বক বক করি


শুভ: কেনো আপনি জানে না বুঝি ছোট খুকি,,,,


আমি: আমি বলছি আমি খুকি... 


শুভ: অসয্য মাথা খেয়ে ফেলবে দেখছি ( বিড় বিড় করে)  


আমি: আপনি কিন্তুু,,,,,,


     হঠাৎ ফোন বেঁজে উঠলো,,,,


আমি: আপনার ফোন বাঁজছে,,,,


শুভ: আমার না আপনার স্টুপিড!!


আমি: কি আমি স্টুপিড,,,, আগে কলটা রিসিভ করি পরে দেখে নিবো আপনাকে,,,,,


শুভ: হ্যাঁ পরে যা করার কইরেন এখন তো কলটা গিয়ে ধরেন,,,,


আমি: যাচ্ছি,,,( ভেচকি কেঁটে)  


      বসা থেকে উঠে গিয়ে টেবিল থেকে ফোনটা হাতে নিয়ে দেখি আব্বু তাড়াতাড়ি করে রিসিভ করলাম


আমি: সরি আব্বু একটু ব্যস্ত ছিলাম তাই লেট হলো,,,,,


আব্বু: ঠিক আছে আম্মাজান,,,,,


আমি: আব্বু ঠিক মতো পৌঁছে গেছেন তো,,,,


আব্বু: হ্যাঁ,,,,,,শুভ আছে,,,,


আমি: হ্যাঁ আব্বু আছে পাশে,,,,


আব্বু: তখন তাড়াহুরু করে চলে আসলাম শুভকে তো বলে আসতে পারলাম না দেও ফোনটা শুভর কাছে


আমি: ওয়েট,,,,,


    ফোনটা শুভর কাছে দিতেই


শুভ: কি হয়ছে


আমি: আব্বু কথা বলবে ধরুন,,,,


    শুভ বিরক্ত নিয়ে ফোনটা হাতে নিয়ে আব্বুকে সালাম করলো,,,,


আব্বু: আসার সময় তাড়াহুরু ছিলো বলে আনতে পারিনি তব বাবা কাল সন্ধায় আদিবা কে নিয়ে চলে এসো আমাদের বাসায়


শুভ: সরি আংকেল আমি যেতে পারবো না অফিস আছে,,,


আব্বু: কি বলছো আসতে হয় তো সন্ধায় এসো তাইলে,,,,


শুভ: আমি যেতে পারবো না আদিবা যদি ইচ্ছে হয় যাবে সমস্যা নাই,,,,


আব্বু: বাবা তুমি আসলে খুশি হবো


শুভ: সরি আংকেল,,,,


      শুভ ফোনটা আমার দিকে ধরলো আমি ফোনটা হাতে নিলাম


আমি: হ্যাঁ আব্বু


আব্বু: আম্মাজান কো সমস্যা কি শুভ আসতে চাচ্ছে না যে


আমি: কেনো যাবে না নিশ্চয় যাবে টেনশন করো না সন্ধায় দুজনই পৌছে যাবো,,,,,


আব্বু: হুমম অপেক্ষা করবো,,,,


     ফোনটা রেখে লোকটার দিকে তাকিয়ে দেখি অগ্নিদৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে,,,,,,,


শুভ: আমমমমি যাবো না হুমম যাবো না ( দাঁত চেঁপে)  


আমি: আপনি যাবেন,,,,, নতুন বিয়ে হয়েছে আমাদের আর বিয়ের পর যেতে হয় একবার সো আমরা যাচ্ছি,,,,


শুভ: আমি যাচ্ছি না,,,,


      শুভ কলমটা ফ্লোরে ছুড়ে মেরে হন হন করে রুম থেকে চলে গেলো,,,,,


আমি: আজব লোক তো!!! মাথায় কোন প্রবলেম নিশ্চয়,,,,,


      আমি গিয়ে বিছানায় বসে পা দোলাতে লাগলাম তখনি চোখ পড়লো বক্সটা উপর টেবিল থেকে বক্সটা নিয়ে খুলতে লাগলাম...... বক্সটা খুলে ব্যশ আবাক হলাম তার থেকে বেশি খুশি হলাম,,,,,


আমি: উয়াওওও


     দুটো পুতুল পাশাপাশি দাড়ানো একটা মেয়ে আরেকটা ছেলে!! পাশের সুইচটা অন করতেই পুতুল দুটো চারপাশে ঘুরতে লাগলো আর লাল, নীল বাতি জ্বলতে লাগলো,,,,,


আমি: এত সুন্দর একটা গিফট বাট কে দিলো,,,,,,


     গিফট বক্স চারপাশে নাম খুঁজতে লাগলাম কিন্তুু কিছুই পেলাম না,,,,,


তখনি শুভ রুমে আসলো,,,,


আমি: এই যে শুনেন,,,,


      শুভ আমার কথা পাত্তা না দিয়ে আবার কাজে বসলো,,,,,আমি উঠে গিয়ে পাশে গিয়ে বসলাম


আমি: দেখুন না কত সুন্দর একটা গিফট,,,, এই দেখেন না একটু,,,,,


    শুভ আড় চোখে একটু তাকালো


আমি: এটা আমি আর এটা আপনি,,,,( লজ্জ পেয়ে) 


শুভ: মজা হচ্ছে মজা,,,,গিয়ে ঘুমান যান ( ধমক দিয়ে)  


    শুভ ধমক শুনে বসা থেকে উঠে দাড়ালাম,,,,,তাড়াতাড়ি করে গিয়ে বিছানায় লক্ষী মেয়ের মতো সুয়ে পড়লাম,,,,,এপাশ ওপাশ করতে লাগলাম ঘুম আসছেনা,,,,,


আমি: এভাবে কেউ লাইট অন করে রাখলে ঘুম হয় নাকি,,,,


     হঠাৎ শুভ উঠে এসে লাইট অফ করে ফোনে আলো জ্বালিয়ে কাজ করতে লাগলো,,,,


আমি: অদ্ভুত তো,,,,কাজ না করলে বুঝি চলতেছিলনা,,,,


শুভ: আপনি ঘুমাবেন নাকি উঠে যাবো আমি ,,,,,


আমি: ঘুমাচ্ছি তো,,,,,!!! রাক্ষস, ডাইনোসর, হাতি, তোরে আমি ভর্তা বানিয়ে খেয়ে নিবো ( মনে মনে)  


        বক বক করতে করতে কখন ঘুমিয়ে গেছি বুঝতে পারিনি,,,,,,,,,,,


  সকালে ঘুম ভাঙ্গতেই চোখ মেলে তাকাই চমক উঠলাম লোকটার বুকের উপরে সুয়ে আছি 

 

আমার গলার চেইন সাথে লোকটার চেইনে আটকেছিলো তাড়াতাড়ি করে উঠে আসতেই ছিটকে গিয়ে সোঁজা 

    লোকটার ঠোঁটের উপর গিয়ে আমার ঠোঁটটা পড়লো তখনি শুভ জেগে গেলো 


আমি: আহহহহ মি সররররি


      হঠাৎ শুভ জোরে ঠাক্কা দিতেই সোঁজা গিয়ে নিচে পড়লাম চেইন ছিড়ে ফুঁতি গুলো ফ্লোরে টপ টপ করে গলা থেকে পড়লো,,, 


  শুভ বিছানা থেকে নেমে আমার সামনে এসে অগ্নি দৃষ্টিতে তাকালো,,,,আমিও উঠে দাড়ালাম


আমি: আহহমি সত্যি বুঝতে পারি না ( কাঁপা কাঁপা গলাই) 


   শুভ সাপের মতো ফুঁসলাতে লাগলো,,,,চোখের কোনে রক্ত জমে গেলো যেনো মনে হচ্ছিলো এটা কোন মানুষের চোখ হতেই পারে না,,,,


আমি: প্লিজজ ক্ষমা করে 


    কথা শেষ না করতেই শুভ কষিয়ে আমার গালে চর বসিয়ে দিলো,,,,আমি গালে হাত দিয়ে শুভর দিকে তাকালাম চোখ বয়ে পানি ঝড়তে লাগলো,,,,,,


( চলবে)

গল্পঃ_ভিলেন


লেখিকাঃ আদিবা ইসলাম আঁখি


পর্বঃ ০৭


---------------------★★-----------------------


শুভ: আপনি না একজন মেয়ে আপনার কোন লজ্জা নেই  এতোটা বেহায়া.... আপনার একটুও কি বিবেগে বাধঁলো না এরকম কাজ করতে ছিঃ.... ( রেগে রেগে)  


      বুকের ভিতরটা যেনো কেঁপে উঠলো,,,,দুচোখ বয়ে অঝড় পানি ঝড়ছে!!!... দৌড়ে ওয়াসরুমে গিয়ে সাওয়ার নিচে দাড়িয়ে হাউ-মাউ করে কাঁদতে লাগলাম,,,,,


আমি: আমি তো ইচ্ছে করে এমনটা করিনি তাহলে লোকটা কেনো এমন করলো আমার সাথে কেনো কেনো?  ( কাঁদতে কাঁদতে)  


      একটু পর ওয়াসরুম থেকে বের হতেই শুভ এসে সামনে দাড়ালো,,,


শুভ: সরি,,,,! রিয়েলি সরি খুব রাগ উঠে গেছিলো তাই চরটা মেরেছি....


আমি: ইটিস ওকে,,,( নাক টেনে)  


শুভ: প্লিজ কিছু মনে করবেন না,,,,


আমি: হুম ( মাথা নিচু করে)  


শুভ: একটা কথা আপনার  জেনে রাখা  খুব দরকার.... আমি আপনাকে স্ত্রী অধিকার দিতে পারবো না সরি,,,,


      লোকটার কথা শুনে আবাক হয়ে তার দিকে তাকালাম,,,,,


আমি: তাহলে বিয়েটা করলেন কেনো,,,,


শুভ: করেছি মানে করেছি ( অন্যপাশে তাকিয়ে) 


আমি: আজব তো!!! বিয়ে করেছেন যখন স্ত্রী অধিকার তো দিতেই হবে,,,,


শুভ: দেখুন সব কিছুর লিমিট আছে আমি যখন বলছি দিতে পারবো না তার মানে পারবোই না,,,,( ধমক দিয়ে) 


আমি: তাহলে বিয়েটা করলেন কেনো বলুন,,,,


শুভ:  প্রয়োজন ছিলো তাই করেছি ( অন্য দিকে তাকিয়ে) 


আমি: আমার  দিকে তাকিয়ে সত্যিটা বলেন তো,,,


       শুভ কিছুক্ষন আমার দিকে তাকিয়ে হন হন করে বাইরে চলে গেলো,,,,


আমি: কিহহ হলো হঠাৎ লোকটা,,,,,এমন ব্যবহার কেনো করছে আমি তো উনার বউ তাহলে সমস্যা কি কিছুই বুঝতেছি না,,,,হে খুদা প্লিজ দেখো সব যেনো ঠিক থাকে,,,,, ( চোখ বন্ধ করে)  


        অনমনে ভাবতে ভাবতে নিচে নামছি তখনি আশা এসে হাতটা ধরলো,,,,


আশা: এমা তুমি সাঁজো নি কেনো তুমি না নতুন বউ,,,,, 


আমি: এমনি ( মুচকি হেসে) 


আশা: এমনি মানে!!  আমি সাঁজিয়ে দিচ্ছি এসো,,,,


আমি: আশা থাক না প্লিজজজ


আশা: থাক মানে,,, কি হয়ছে কোন সমস্যা বলতে পারো আমায়,,,,


আমি: তেমন কিছু না আশা,,,


আয়শা: কি যে বলিস তুই আশা ভাবির আবার কি হবে....  


আশা: আপু তুই বুঝবি না  তোর তো আর কোন ফিলিংস নেই,,,,,


আয়শা: আশা ( ধমক দিয়ে) 


আশা: একদম ধমকাবি না


আয়শা: তুই কিন্তুু


আমি: চুপপপপ,,,, দুজনি একদম চুপপ কি করতেছো বাচ্চাদের মতো ঝড়গা করছো,,,,( ধমক দিয়ে) 


আশা: তুমি তো দেখছো আপু কেমন করে আগবারিয়ে  ঝগড়া করতে আসছে,,,,,


আমি: হুমম দেখলাম,,,দেখো আশা ও তোমার বড় বোন একটু বকতে পারেই তোমার উচিত চুপ থাকা আর আয়শা শোন ছোট বোন কে একটু ভালোবাসতে শিখো দেখো সম্মান দিলেই সম্মান পাবে,,,,,


আয়শা: কান ঝালা-পালা  বাবা গো এতো জ্ঞান,,,


     আয়শা কানে আগুল দিয়ে চলে গেলো আমি আশার কাঁধে হাত রেখে ইশারা করে চুপ থাকতে বললাম,,,,,


আমি: চলো এসো,,,,


আশা: হুম চলো,,,,


       __ সবাই মিলে এক সাথে খাবার খেয়ে নিলাম,,,,,রুমে এসে দেখি শুভ রেডি হচ্ছে চুপিচুপি রুম ডুকলাম আমায় দেখে শুভ ব্যাগটা নিয়ে রুম থেকে বের হতেই ডাক পিছন থেকে দিলাম,,,,


আমি: একটু তাড়াতাড়ি আসবেন,,,,বাসার সবাই আমাদের জন্য অপেক্ষা করবে


শুভ: আমি যাবো না বলছি তো,,,,


আমি: আমি অপেক্ষা করবো,,,,,


     শুভ কিছু না বলেই চলে গেলো আমি গিয়ে বেলকুনিতে দাড়ালাম,,,,,


      ___ প্রায় সন্ধার দিকে সোফায় বসে আছি হঠাৎ শুভ রুমে এসে ব্যাগটা রেখে বলতে লাগলো,,,


শুভ: যদি যাওয়ার হয় তো যেনো তাড়াতাড়ি রেডি হয়,,,,


আমি: সত্যি যাবেন তো,,,( খুশি হয়ে) 


     শুভ ওয়াসরুমে দিকে চলে গেলো!! আমি  সাত-পাঁচ না ভেবে তাড়াতাড়ি করে রেডি হয়ে নিলাম,,,,,


শুভ: আমি যাচ্ছি আপনি আসুন,,,,


আমি: হুম ( মাথা নাড়িয়ে)  


      শুভ চলে গেলো আমিও পিছন পিছন হাঁটা দিলাম,,,,, নিচে আসতে দেখি সবাই দাড়িয়ে আছি,,,,


মা: বউমা সকালে শুভ সাথে চলে এসো,,,


আশা: হ্যাঁ ভাবি তাড়াতাড়ি এসো খুব মিস করবো,,,


আমি: ঠিক আছে কালই চলে আসবো,,,,


মিঃ মাসুদ: সাবধানে যেও,,,,


আমি: আচ্ছা বাবা,,,, আপনারা সাবধানে থাকবেন,,,,


      সবাইকে বিদায় জানিয়ে বাসা থেকে বের হয়ে গাড়িতে বসলাম 

শুভ আজ ড্রাইফ করছে আমি বাইরে এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছি,,,,,,,একটু পর হঠাৎ গাড়িটা জোরে ব্রেক করতেই ধাক্কা খেলাম,,,,,


আমি: আহহ,,,,,সাবধানে চলবেন তো,,,,


শুভ: বাসায় পৌছে গেছি কখন থেকে ডেকে যাচ্ছি শুনছেন না তো,,,,


আমি: ওহহ সরি সরি বুঝতে পারিনি


শুভ: স্টুপিড,,,,নামুন


       গাড়ি থেকে নেমে তাড়াতাড়ি করে বাসায় ডুকে গেলাম


আমি: আম্মু,,,,,


আম্মু: ওমাগো আদিবা যে

    ওগো দেখো আদিবা আসছে


      উপর থেকে সবাই চলে আসলো,,,,


আব্বু: শুভ আসেনি,,,,


আমি: উনি তো,,,


     পিছনে তাকিয়ে দেখি লোকটা কোথাও নেই,,,,,


আমি: লোকটা কই গেলো,,,,( মনে মনে)  


ছোটমা: আদিবা শুভ কই,,,,,


    শুভ: এই তো,,,,,


   পিছনে তাকিয়ে দেখি দু হাত ভর্তি জিনিস পএ নিয়ে দাড়িয়ে আছে,,,


শুভ: এগুলো যদি ভিতরে রাখতেন 


আব্বু: রহিম এগুলো নিয়ে ভিতরে রাখ,,,,বাবা এসব আনার দরকার ছিলো না,,,


শুভ: প্রথম বার আসলাম এসব না আনলে চলে নাকি,,,,( মুচকি হেসে) 


আব্বু: তুমি সত্যি অনেক অসাধারন তোমাকে জামাই হিসেবে পেয়ে আমি খুব হ্যাপি 


       আব্বু শুভকে জোরিয়ে ধরতেই শুভ অস্তি বোধ করলো,,,,


শুভ: হুমম আমিও খুব হ্যাপি আপনার মতো শশুড় পেয়ে ( বিরক্ত নিয়ে) 


আহিরাঃ জিজু কি বাইরে থাকবে নাকি ভিতরে এসো 


আব্বু: এসো এসো,,,,


       সবাই মিলে শুভকে জামাই আদর করতে ব্যস্ত আমি মন মরা হয়ে দেওয়াল ঘেষে দাড়িয়ে আছি হঠাৎ ছোট বোন আহিরা এসে জোরিয়ে ধরলো,,,


আহিরা: আপু,,,,,,,


আমি: পাগলি,,,,, ( মুচকি হেসে) 


আহিরা: তুমি খুব লাকি এমন একটা বর পেয়েছো,,,,


রাতুল: আহিরা ঠিক বলছে কত হ্যানসাম জিজু একদম হিরো,,,,,


আহিরা: হুমমম আপু কথা বলছিস না যে,,,


আমি: হুমম অনেক লাকি রে ( অনমনে)  


     হঠাৎ  তমা আর সোহম বাসায় ডুকলো,,,,


তমা: আম্মুু


ছোটমা: তোরা এখানে,,,


আব্বু: আমি ডেকেছি আজ তো আসার কথা,,,


আম্মু: ভালো করেছো,,,,,


ছোটআব্বু: না আসতে বললেই ভালো হতো না ভাইজান


আব্বু: কি বলছিস চুপ করো,,,আই তমা ভিতরে সোহম এসো


     ওরা ভিতরে চলে আসলাম সোহম গিয়ে শুভর পাশে বসলো,,,তমা এসে আমার সামনে মাথা নিচু করে দাড়ালো,,,,


তমা: সরি আপু,,,


আমি: আরে পাগলি সরি বলতে হবে না,,,,তোর তো কোন দোষ ছিলো না তাই না,,,


তমা: তবুও আমার জন্য তোমাকে ছোট হতে হলো,,,


আমি: তুই না আমার ছোট বোন সো তোর জন্য এটুকু কিছুই না আমি চাই তোরা হ্যাপি হ,,,,


তমা: হুমমম আপু ( জোরিয়ে ধরে কেঁদে দিলো,,,


আমি: পাগলি একটা,,,,


       ____রাত প্রায় সাড়ে ১০টা বাজে সবাই খাওয়া-দাওয়া শেষ করে রুমে চলে গেলো,,,,শুভকে নিয়ে আমার রুমে নিয়ে আসলাম,,,,


আমি: ফ্রেস হয়ে এসো সুয়ে পড়েন,,,,


শুভ: হুমমম,,,


    শুভ ফ্রেস হতে গেলো আমি গিয়ে সুয়ে পড়লাম,,,,,একটু পর শুভ ওয়াসরুম থেকে বের হয়ে এসে বিছানা থেকে বালিশ আর চাদরটা নিয়ে সোফায় গেলো আমি আবাক হলাম,,,,


আমি: কি করছেন বিছানায় সুয়বেন না,,,,


শুভ: না


আমি: কেনো,,,,?


শুভ: কাল যা ঘটিয়েছেন তারপর আপনার সাথে একি বিছানায় ঘুমাতে পারবো না


আমি: কিহহ"! তাই বলে সোফায় সুয়বেন,,,


শুভ: হুমম,,,আপনি গিয়ে সুয়ে পড়েন,,,


আমি: আপনার তো সোফায় ঘুমানোর অভ্যস নেই


শুভ: মেনেচ করে নিবো,,,,


আমি: পারবেন না,,,,আপনি বিছানায় ঘুমান আমি সোফায় সুচ্ছি কেমন


শুভ: না না আপনি গিয়ে সুয়ে পড়েন আমি পারবো বলছি তো


আমি: আপনি পারবেন না যান গিয়ে সুয়ে পড়েন,,,,


শুভ: কিন্তুু আপনি


আমি: সমস্যা নাই আপনি যান গিয়ে সুয়ে পড়েন,,,


শুভ: ওকে,,,,


      শুভ গিয়ে বিছানায় সুয়ে পড়লো আমি সোফায় গিয়ে সুয়ে পড়লাম,,,,

       বার বার নিজেকে একটা  প্রশ্ন করতে লাগলাম...... 


   (  চলবে)

Post a Comment

Previous Post Next Post